এল ক্লাসিকোয় রেগে যাওয়া ফুটবলারদের যে পরামর্শ দিলেন বার্সা গোলরক্ষক
প্রকাশিত:
১ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৬
আপডেট:
১ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৮
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। বার্সেলোনার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে রিয়াল মাদ্রিদের জয়ের পর উভয় দলই মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। তর্কাতর্কি–হাতাহাতিতে গড়ানো সেই উত্তেজনার রেশ এখনও শেষ হয়নি। পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন দৃশ্যপটে দেখা যায়নি বার্সা গোলরক্ষক ভয়চেক সিজনিকে। ওই ম্যাচে এক পেনাল্টিসহ ৯টি সেইভ করা এই তারকা রেগে যাওয়া ফুটবলারদের একটি পরামর্শ দিয়েছেন।
ওই ম্যাচে রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর আগে উদযাপনে ফেটে পড়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু ও স্বাগতিক রিয়ালের পুরো স্কোয়াড। হাত মিলিয়ে ফেরার সময় কারভাহাল হাতের ইশারায় ইয়ামালকে বলেন, ‘তুমি বড্ড বেশি কথা বলো, এখন কথা বলো’। জবাবে নাকি ইয়ামালও ‘টানেলে দেখা হবে’ বলে পাল্টা তোপ দাগেন। তবে ওই সময় মাঠেই মেজাজ হারিয়ে জাতীয় দল সতীর্থের দিকে তেড়ে যেতে চান বার্সার তরুণ এই ফরোয়ার্ড। পথে বাধা দেন রিয়ালের মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। সেখানে কিছুক্ষণ বাদানুবাদের পর মাঠে ছেড়ে যাওয়ার সময় আবারও তর্কে জড়ান ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে। সবমিলিয়ে রিয়াল-বার্সার বেশ কয়েকজন মেজাজ হারিয়েছেন।
এল ক্লাসিকো পরবর্তী এমন উত্তাপ নিয়ে পোল্যান্ডের সাবেক তারকা গোলরক্ষক সিজনি বলেন, ‘আমি ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই শিখেছি– আবেগ আমাকে কোনো সাহায্য করবে না, তাই এমন মুহূর্তে আমি নিজেকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলি। সেই ধারাবাহিকতায় এল ক্লাসিকোর পর সবাই যখন তর্ক ও পরস্পর লড়ছিল, আমি শুধু ভাবছিলাম “আমরা ম্যাচটা হেরেছি, কিন্তু এখান থেকে বের হয়ে আসা উচিত।” আমি সবাইকে আহবান জানাব– সবাই মেডিটেশন চর্চা এবং লম্বা শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন।’
পেদ্রির ক্যারিয়ারে প্রথম লাল কার্ড, হাতাহাতিসহ বার্নাব্যুতে আরও যা ঘটল
একইভাবে ম্যাচ শুরুর আগে-পরেও মেডিটেশন করার কথা জানান অভিজ্ঞ এই বার্সা গোলরক্ষক, ‘আমি ম্যাচ শুরুর আগে এবং হাফ-টাইমে মেডিটেশন করি। তখন লোকজন আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকায়, কারণ লকার রুমের মাঝে বসে এই কাজ শুরু করি আমি। অন্যদেরও এই পরামর্শ দিই– স্বাভাবিক এবং উত্তপ্ত উভয় পরিস্থিতিতেই এভাবে দীর্ঘ শ্বাস গ্রহণ-ত্যাগ জরুরি।’
২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম এল ক্লাসিকোয় গোলরক্ষক হিসেবে সর্বোচ্চ ৯টি সেইভ করেছেন ভয়চেক সিজনি। এমনকি ২০১৫-১৬ মৌসুমের পর বার্সা-রিয়ালের ম্যাচে প্রথমবার তিনি পেনাল্টি ঠেকানোর নজিরও গড়েছেন। এবার তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের শিকার কিলিয়ান এমবাপে, এর আগে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি এবং নেইমার জুনিয়রের পেনাল্টি ঠেকানোর রেকর্ড আছে সিজনির। পেনাল্টি ঠেকাতে আগে থেকেই প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের নিয়ে বিশ্লেষণ করে নামেন বলে তিনি জানিয়েছেন। সিজনি বলেন, ‘ম্যাচের আগে আমি পেনাল্টি টেকারদের নিয়ে পড়াশোনা করি। পেনাল্টি নিতে পারে এমন ফুটবলারদের সর্বশেষ ২০টি শটের ভিডিও দেখি আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কখনও কখনও তাদের রান-আপ দেখে আমি অগ্রীম তথ্য পাই। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ফুটবলাররা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে শট নিয়ে থাকে, যার ওপর দলের হার-জিত নির্ভর করে। আমি চেষ্টা করি প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সব তথ্য সংগ্রহ করে, সেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণের। এমবাপের ক্ষেত্রে, আমার বিপক্ষে গত মৌসুমেও পেনাল্টিতে গোল করেছিল। আমি এবার আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, এবারও সে একইদিকে বল মারবে। প্রত্যাশা অনুযায়ীই ঘটেছে এবং সৌভাগ্যবশত আমি এটি ঠেকাতে পেরেছি।’

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: