কোরবানি না করলে গুনাহ হয়? কী বলছে ইসলাম
প্রকাশিত:
১৪ মে ২০২৫ ১৩:৩৫
আপডেট:
১৪ মে ২০২৫ ১৬:৫৯

কোরবানি মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ইবাদত। প্রতি বছর ঈদুল আজহার সময়ে মুসলিম উম্মাহ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করে থাকে। কোরবানির মাধ্যমে যেমন তাকওয়া প্রকাশ পায়, তেমনি এটি ইসলামের একটি স্পষ্ট নিদর্শন হিসেবেও বিবেচিত। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করেন—সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ কোরবানি না করেন, তবে কি গুনাহ হয়? আসুন বিস্তারিত জেনে নিই।
কোরবানির গুরুত্ব কী?
আল্লাহ তাআলা কোরবানির হুকুম দিয়ে বলেন— “অতএব, আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।” (সুরা কাউসার: ২)
রাসুলুল্লাহ (স.) কোরবানির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন— “যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।” (মুসনাদে আহমদ: ৮৮৩৬; ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট যে, কোরবানি শুধুমাত্র একটি ঐতিহ্য নয়, বরং একটি আবশ্যিক আমল—যা অবহেলা করলে গুনাহ হয়।
কোরবানি কাদের জন্য ওয়াজিব?
হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, কোরবানি ওয়াজিব হয় সেই সব মুসলমানদের জন্য—যারা ঈদের দিনগুলোতে (১০, ১১ ও ১২ জিলহজ) মুকিম অর্থাৎ নিজ এলাকায় অবস্থানরত থাকবেন এবং যাদের কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমমূল্য সম্পদ বা নগদ অর্থ)। স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা, মৌলিক প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ও বাড়ি, ব্যাবসায়িক পণ্য ইত্যাদি কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। (আলমগিরি: ৫/২৯২-২৯৩)
নিসাব পরিমাণ সম্পদ যার আছে, সে ব্যক্তি কোরবানির জন্য দায়বদ্ধ। কেউ যদি এসব শর্ত পূরণ করার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে কোরবানি না করেন, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন বলে ফিকহবিদরা মত দিয়েছেন।
কোরবানির সামর্থ্য না থাকলে কী হবে?
যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, অর্থাৎ যাদের কাছে কোরবানির নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ নেই, তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। তারা কোরবানি না করলেও গুনাহগার হবেন না।
শেষ কথা, কোরবানি ইসলামের একটি নিদর্শন এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এটি পরিত্যাগ করা গাফিলতি এবং স্পষ্ট গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। মুসলিমদের উচিত কোরবানির গুরুত্ব উপলব্ধি করে যথাযথভাবে তা আদায় করা।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সুন্নাহ মোতাবেক কোরবানি আদায়ের তাওফিক দিন। আমিন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: