নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে ফাইনালে পাকিস্তান
 প্রকাশিত: 
 ৯ নভেম্বর ২০২২ ২৩:৫৮
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১২:০৬
 
                                গেল বার গ্রুপ পর্বে ভারতকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানকে টুর্নামেন্টের ফেভারিট হিসেবে দেখা শুরু করেছিলেন অনেকেই। তবে সেবার সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায়ঘণ্টা বেজেছিল বাবর আজমের দলের। ২০২১ সালের সেই আক্ষেপ ২০২২ সালে এসে ঘুচিয়েছে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পৌঁছে গেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে।
সিডনিতে আজকের এই সেমিফাইনালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিউজিল্যান্ড প্রথম ওভারেই পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের তোপের মুখে। বাঁহাতি পেসারদের বিপক্ষে ফিন অ্যালেনের দুর্বলতার বিষয়টা হয়তো বাবর আজমের জানাই ছিল। সে কারণেই হয়তো, প্রথম ওভারে দেখা মিলল শাহিন আফ্রিদির।
প্রথম বলে চার মারলেও দ্বিতীয় বলেই অ্যালেনের দুর্বলতা প্রকাশ পেল। এলবিডব্লিউর আবেদন উঠেছিল, আম্পায়ার মারাই ইরাসমাস আঙুলও তুলে দিয়েছিলেন। তবে রিভিউতে দেখা যায়, বলটা প্যাডে লেগেছিল ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে। সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও পরের বলেই এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।
শুরুর ধাক্কাটা উইলিয়ামসন আর ডেভন কনওয়ে মিলে সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। সে চেষ্টার ইতি ঘটল পাওয়ারপ্লের শেষ বলে। হারিস রউফের বলটা মিড অফে ঠেলে একটা রান নিতে চেয়েছিলেন, তবে শাদাব খানের দারুণ এক থ্রোতে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় তার, মাসুল গুণতে হয় উইকেটটা খুইয়ে।
ওভার দুয়েক পর গ্লেন ফিলিপসও যখন ফিরলেন মোহাম্মদ নওয়াজের শিকার হয়ে, তখন মনে হচ্ছিল তাসের ঘরের মতোই বুঝি ভেঙে পড়ছে কিউই লাইনআপ। তবে তা হয়নি উইলিয়ামসন আর ড্যারিল মিচেলের কল্যাণে।
উইলিয়ামসন ফিফটির আগে আউট হন, তবে ফেরার আগে মিচেলের শেষের ঝড়ের মঞ্চটা গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মিচেল পেলেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় আর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের মঞ্চে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। তাতে ভর করেই শেষতক নিউজিল্যান্ড পায় ১৫২ রানের পুঁজি।
চলতি বিশ্বকাপে ১৫০ এর আশপাশের পুঁজি নিয়ে দলগুলোকে জিততে দেখা গেছে অনেক বারই। তবে যে দলে আছেন বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো দুই ওপেনার, যাদের ১৫০ রানের ওপেনিং জুটিই আছে ৫টি, তাদের বিপক্ষে তো ১৫০ রানের পুঁজি খুব বেশি কিছু নয়!
তবে নিউজিল্যান্ড চেষ্টা করেছিল বৈকি! ইনিংসের প্রথম ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা বাবর আজমের ব্যাট ছুঁয়ে চলে গিয়েছিল উইকেটের পেছনে, তবে তা উইকেটরক্ষক ডেভন কনওয়ে তালুবন্দি করতে পারেননি, সুযোগটা যায় ফসকে।
চলতি বিশ্বকাপে খুবই খারাপ সময় কাটানো বাবর আজমের ফর্মটাও ফেরাল যেন সেই ক্যাচ মিস। ছুঁলেন টুর্নামেন্টের প্রথম ফিফটি। সঙ্গী রিজওয়ানও এরপর ছুঁয়েছেন ৫০ রানের মাইলফলক। দুজন মিলেই নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেওয়ার কাজটা সেরে ফেলেন।
তবে দল যখন জয় থেকে ৫১ রান দূরে তখন ফেরেন বাবর। কিউইদের নিভু নিভু আশাটাও যেন খানিকটা জ্বলে ওঠে তখন। পাকিস্তানের যে এমন পর্যায় থেকে হারার নজির বেশুমার! ইনিংসের ১৭তম ওভারে যখন রিজওয়ানও ফিরলেন ফিফটি ছুঁয়ে, তখনও নিউজিল্যান্ড খানিকটা আশা দেখছিল বৈকি! তবে সব আশার সলীল সমাধি হলো এরপর মোহাম্মদ হারিসের ইনিংসে। ২৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে তিনিই এরপর পাকিস্তানকে নিয়ে গেছেন জয়ের কাছে।
জয় থেকে একটু দূরে তিনি ফেরেন মিচেল স্যান্টনারের শিকার হয়ে। তবে তাতে পাকিস্তানের জয়টা আটকে থাকেনি। ৭ উইকেটের জয় নিয়ে ২০০৯ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখে দলটি। আর গতবারের ফাইনালিস্টরা এবার বিদায় নেয় এক ধাপ আগেই।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: