রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়


প্রকাশিত:
১৮ মে ২০২৫ ১৩:১৫

আপডেট:
১৮ মে ২০২৫ ১৮:২৮

ছবি সংগৃহীত

চুলকানি বলতে খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যাকেই বুঝি আমরা। কিন্তু এই সাধারণ সমস্যাটিই জীবন করে তোলে দুর্বিষহ। বর্তমানে দেশের অসংখ্য মানুষ ভুগছেন স্ক্যাবিস নামে এক ধরনের চুলকানিতে। যা বাংলায় খোসপাঁচড়া নামেও পরিচিত। সারকোপ্টেস স্ক্যাবিই নামের একটি ক্ষুদ্র বরোজিং মাইট দ্বারা সৃষ্ট হয় স্ক্যাবিস। মাইটের গর্তের জায়গায় তীব্র চুলকানি অনুভব করেন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।

স্ক্যাবিস কি:
স্ক্যাবিস হলো সারকোপ্টেস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। শরীরের সেই অংশে চুলকানি ও ফুসকুড়ি সৃষ্টি হতে পারে সেসব স্থানে এই মাইটগুলো জমে থাকে। এই মাইটগুলো ত্বকের ভেতর ডিম পাড়ে। ফলে সংক্রমণটি ক্রমাগত চুলকানি এবং তীব্র ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে।

স্ক্যাবিস একটি অত্যন্ত সংক্রামক সংক্রমণ এবং এর মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। রাতে চুলকানির ইচ্ছা তীব্র হতে পারে। স্ক্যাবিস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। খুব তাড়াতাড়ি শনাক্ত হলে এটি সহজেই চিকিৎসাযোগ্য।

স্ক্যাবিস দুই উপায়ে দ্রুত সংক্রমণ করতে পারে:
শারীরিক স্পর্শ
সংক্রামিত পোশাক এবং বিছানাপত্র
স্ক্যাবিস সহজে ওষুধের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য হলেও চিকিৎসার পরে বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত চুলকানি চলতে পারে।

শরীরের যেসব অংশে স্ক্যাবিস হয়:
প্রাথমিক সংস্পর্শে আসার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো পুরোপুরি প্রকাশ নাও পেতে পারে। সাধারণত ত্বকের ভাঁজে এই সমস্যা দেখা দেয়। যদিও শরীরের প্রায় সব অংশেই স্ক্যাবিস হতে পারে তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় যেসব এলাকা সেগুলো হলো-

আঙ্গুলের ফাঁক বা ভাঁজ
বগল
কোমরের চারপাশ
কব্জির ভেতর বরাবর
ভেতরের কনুইয়ের ওপর
পায়ের তলায়
স্তনের চারপাশ
পুরুষের যৌনাঙ্গের চারপাশ
নিতম্বের ওপর
হাঁটু
স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়:
স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁচড়া প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই-

১. পরিচ্ছন্নতা:
স্ক্যাবিস প্রতিরোধ করতে নিয়মিত গোসল করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া, এবং হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করুন। নিয়মিত পোশাক পরিবর্তন করুন। অনেকে এক অন্তর্বাস টানা ৩-৪ দিন পরেন। যা মোটেও উচিত নয়।

২. আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে যাওয়া:
কেউ স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। সরাসরি স্পর্শে এই রোগ সবচেয়ে দ্রুত ছড়ায়

৩. পোশাক ও বিছানার চাদর পরিষ্কার:
পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানি (৫০° সেলসিয়াস বা তার বেশি) দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত।

৪. গণ-চিকিৎসা গ্রহণ:
স্ক্যাবিসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গণ-চিকিৎসা প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন। পারমেথ্রিন বা আইভারমেক্টিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ব্যাপারে আগে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. পরিবারের অন্য সদস্যদের চিকিৎসা:
পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে, অন্যান্য সদস্যদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো উচিত। কারণ একজন আক্রান্ত হলে সহজেই অন্য সদস্যরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

৬. আসবাবপত্র পরিষ্কার করা:
কেবল নিজে পরিষ্কার থাকলেই চলবে না। স্ক্যাবিস প্রতিরোধে আসবাবপত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করা ও জীবাণুমুক্ত করা জরুরি।

৭. অন্যান্য সতর্কতা:
সাধারণত, একজন ব্যক্তি একবার পারমেথ্রিন লাগালেই যথেষ্ট। কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারও ব্যবহার করা যেতে পারে। আইভারমেক্টিন একবার ব্যবহারের মাধ্যমেই ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

যদি ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস হয়, তাহলে ঘর এবং আসবাবপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা উচিত।

(এই লেখাটি সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লেখা। কোনো ওষুধ সেবন বা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top