কাজের বিনিময়ে কুপ্রস্তাব পেয়েছেন যেসব তারকা
প্রকাশিত:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৪:০০
আপডেট:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৮:৫১

চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘কাস্টিং কাউচ’ নতুন কিছু নয়। উঠতি অভিনয়শিল্পী বিশেষ করে অভিনেত্রীদের সঙ্গে বেশি ঘটছে। বহু নায়িকা লালসার শিকার হয়েছেন প্রযোজক-পরিচালকদের।
শুধু অভিনেত্রীই নন, তারকারাও কাজের বিনিময়ে কুপ্রস্তাব পেয়েছেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু তারকার সম্পর্কে, যারা কাজের বিনিময়ে বিভিন্ন সময় প্রযোজক-পরিচালকদের থেকে কুপ্রস্তাব পেয়েছিলেন।
পরিচালক সাজিদ ২০০৪ সালে ‘হে বেবি’ ছবি পরিচালনা করছিলেন। এ ছবিতে কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নবীনা বোলে। চার মাস আগে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর দাবি করেন, “সাজিদ বলেন, ‘তোমার সমস্ত পোশাক খুলে অন্তর্বাস পরে বসো। আমি দেখতে চাই, নিজের শরীর নিয়ে তুমি কতটা স্বচ্ছন্দ বোধ করও’।”
বলিউড জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা জনি লিভারে মেয়ে জেমি লিভার। বাবা নামকরা অভিনেতা হলেও তিনিও পরিচালকের কুপ্রস্তাব পেয়েছিলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন জেমি। অভিনয়ের জন্য অডিশন দিতে গিয়ে শুনতে হয়েছিল, ‘তুমি কী তোমার পোশাক খুলতে পারবে?’
পরিচালক জেমিকে বলেন, ‘তোমাকে একজন ৫০ বছর বয়সী পুরুষকে পটাতে হবে। এর জন্যে তুমি কী পোশাক খুলতে পারবে? তুমি আমাকে খুশি করতে কী কী করতে পারবে?’ অভিনেত্রী তাঁর প্রস্তাবে রাজি না হলে ক্রমাগত বোঝানোর চেষ্টা করেন।
বলিউডের ঠোট কাঁটা অভিনেত্রী কঙ্গনা রানৌত ক্যারিয়ারের শুরুতে যৌন হেনেস্তার শিকার হয়েছিলেন। কুপ্রস্তাব পেয়েছিলেন সানি লিওনও। ভালো চরিত্রের লোভ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। এ প্রসঙ্গে কঙ্গনা বলেন, ‘আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক প্রযোজক।’
নীল ছবির তারকা খ্যাতি পেছনে ফেলে বি-টাউনে থিতু হতে এসেছিলেন সানি লিওন। পর্দায় নিজের প্রমাণ করতে মুখিয়ে ছিলেন তিনি। সেই সুযোগে তাকে দেওয়া হয়েছিল এমন অসৎ প্রস্তাব।
বলিউডের একসময়ের লাস্যময়ী মমতা কুলকার্নির সঙ্গেও ঘটেছিল এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তিনি অভিযোগ এনেছিলেন নির্মাতা রাজকুমার সন্তোষীর বিরুদ্ধে। জানিয়েছলেন, ভালো চরিত্রে সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ফুসলিয়েছিলেন তাকে এই নির্মাতা। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নিকেও কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। ‘দ্য চাইনা গেট’ সিনেমার শুটিংয়ে সময় রাজকুমার সন্তোষী মমতা কুলকার্নিকে কুপ্রস্তাব দেন । বিষয়টি পরে প্রকাশ্যে আনেন মমতা।
খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয়ে সাবলীল ছিলেন মল্লিকা শেরাওয়াত। অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করেও বলিউডে স্থায়ী হতে পারেননি। নিজের ব্যর্থতার জন্য দুষলেন বি-টাউনের প্রথম সারির নায়কদের। কাস্টিং কাউচের কারণে তিনি অভিনয় ক্যারিয়ার জলাঞ্জলি দিয়েছেন।
মধ্যরাতে ছবির নায়ক আমার ঘরে কড়া নাড়ত: মল্লিকা শেরাওয়াত
অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘প্রথম সারির অভিনেতারা আমার সঙ্গে কাজ করতে চান না। এর কারণ আমি আপস করি না। বিষয়টা খুবই সহজ। প্রথম সারির নায়করা এমন নায়িকা পছন্দ করেন, যাদের তারা নিজের মতো চালাতে পারেন। কিন্তু আমি সেরকম একেবারেই নই। আমার ব্যক্তিত্বও সেরকম নয়। কারও হাতের পুতুল নই আমি। কেউ আমাকে নিয়ে খেলতে পারে না। রাত ৩টার সময় কোনো নায়িকাকে ফোন করে যদি কোনো নায়ক ডাকেন, আর তিনি যদি যেতে রাজি না থাকেন তাহলে পরদিন ছবি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।’
শুধু নারীরাই নন, বলিউডে পুরুষ অভিনেতারাও কাস্টিং কাউচের শিকার হন। বলিউডে আত্মপ্রকাশের আগে আয়ুষ্মান খুরানা একজন জনপ্রিয় সঞ্চালক ছিলেন। অভিনয় জীবন শুরুর দিনগুলোতে তাঁকে কিছু কাস্টিং ডিরেক্টর দ্বারা যৌন সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। একজন টেলিভিশন পরিচালক তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা তিনি গ্রহণ করেননি। কাস্টিং কাউচের বাস্তবতা নিয়ে কথাও বলেছিলেন তিনি।
কাস্টিং কাউচের শিকার হওয়া তালিকায় রয়েছেন জনপ্রিয় বলি তারকা রণবীর সিং। বিষয়টি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচের অস্তিত্ব আছে। আমি আমার সংগ্রামের দিনগুলোতে এটি অনুভব করেছি। তবে এটি নির্ভর করে আপনি কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন, তার ওপর। আমি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করাটা বেছে নিয়েছি।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: