হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার বদলা নিতে
ভারত বিশ্বকাপে নাশকতার হুমকি
 প্রকাশিত: 
 ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২২
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৩৫
                                আর মাত্র কয়েক দিন পর ভারতে শুরু হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে নাশকতার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রনিবাসী খালিস্তানপন্থী নেতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুন। কানাডায় বসবাসকারী শিখদের অন্যতম নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার বদলা নিতে তিনি এই হুমকি দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বার্তায় কানাডাপ্রবাসী পান্নুনকে বলতে দেখা গেছে, ‘৫ অক্টোবর থেকে বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু নয়, শুরু হবে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ কাপ।’
হরদীপের হত্যার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি দায়ী করে তিনি বলেন, ‘দিল্লি খালিস্তান হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার জন্য আপনি দায়ী এবং শিখ ফর জাস্টিস এই হত্যার প্রতিশোধ নেবে। আহমেদাবাদে ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া আইসিসি বিশ্বকাপ আমাদের লক্ষ্য।’
ভারতের শিখ ধর্মাবলম্বী ও খালিস্তান আন্দোলনের প্রতি সহমর্মী জনগণকে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তান কায়েমের আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপ বর্জনের আহ্বানও জানিয়েছেন পান্নুন।
আগামী ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে আইসিসি বিশ্বকাপের এবারের আসর। এই আসরের প্রথম ম্যাচ হবে গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে। ঘটনাচক্রে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মানুষ।
পেশায় আইনজীবী গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুন শিখদের ঘোষিত পৃথক রাষ্ট্র খালিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দল শিখস ফর জাস্টিসের (এসএফজি) যুক্তরাষ্ট্র শাখার আইন বিষয়ক উপদেষ্টা। বেশ কয়েক বছর আগে ভারতীয় পাঞ্জাব রাজ্যের খানকোট জেলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে স্থায়ী হন তিনি।
বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা চালানোর অভিযোগে শিখস ফর জাস্টিস এবং অপর খালিস্তানপন্থী সংগঠন খালিস্তান টাইগার ফোর্সকে নিষিদ্ধ করেছে ভারত। দেশটির অভ্যন্তরে তেমন তৎপর না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার শিখদের মধ্যে বেশ সক্রিয়ভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে শিখস ফর জাস্টিস এবং খালিস্তান টাইগার ফোর্স।
ভারতের পরই যে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিখ বসবাস করেন, তার নাম কানাডা। দেশটির ২০২১ সালের জনশুমারির তথ্য বলছে, প্রায় ৮ লাখ শিখ ধর্মাবলম্বী বসবাস করেন কানডায়।
হরদীপ সিং নিজ্জর ছিলেন কানাডার বসবাসকারী শিখদের একজন নেতা । ১৯৭৭ সালে তিনি ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলা থেকে কানাডায় গিয়েছিলেন, পরে সেখানাকার নারিকত্বও অর্জন করেন।
এদিকে ভারতের একজন তালিকাভুক্ত ‘ফেরার’ সন্ত্রাসীও ছিলেন হরদীপ। ভারতের অন্যতম বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন খালিস্তানি টাইগার ফোর্স এবং ‘শিখস ফর জাস্টিস’ কানাডা শাখার নেতা ছিলেন তিনি। দুটি সংগঠনই ভারতে নিষিদ্ধ। হরদীপকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করাতে আগ্রহী ছিল ভারত।
গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ভ্যানকুভার শহরের একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হরদীপ সিং নিজ্জর।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সম্প্রতি ভারতকে সরাসরি দায়ী করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ট্রুডো বলেন, তার দেশের গোয়েন্দারা হরদীপ হত্যায় ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন।
ট্রুডো এই অভিযোগ তোলার পর থেকে নজিরবিহীন টানাপোড়েন শুরু হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, গুরুপতওয়ান্ত সিং পান্নুনও ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় আছেন। ২০২০ সালের জুলাই মাসে তাকে ‘তালিকাভুক্ত’ সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তার দুই মাস পর ভারতে তার যাবতীয় সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: