ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্যের লড়াই, গুলিবিদ্ধ আরও এক তরুণের মৃত্যু
প্রকাশিত:
৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:২৮
আপডেট:
৩ নভেম্বর ২০২৫ ২০:২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চলা সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ আরও এক তরুণের চিকিৎসাধীর অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ইয়াছিন (২২) নামে এক তরুণ সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে মারা গেছেন। এ নিয়ে দুই দিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল দুইজনে।
নিহত ইয়াছিন নবীনগর পৌর এলাকার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। এর আগে একই ঘটনায় শনিবার রাতেই মারা যান থোল্লাকান্দি গ্রামের কুখ্যাত মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া (৩০)।
তার ভাই শাহীন মিয়া বলেন, ভোরের দিকে ভাইয়ের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে মারা যায়। এখন মরদেহ নিয়ে নবীনগরের পথে আছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণি শাহ মাজারসংলগ্ন এক হোটেলে বসেছিলেন শিপন মিয়া। হঠাৎ মুখোশধারী কয়েকজন সশস্ত্র লোক হোটেলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হন শিপন, হোটেলকর্মী ইয়াছিন এবং স্থানীয় তরুণ নূর আলম (১৮)। গুলির শব্দে মুহূর্তে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, তবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বিনা বাধায়।
রাতেই শিপনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মনেক ডাকাতের অনুসারীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালায়। সেই হামলায় স্থানীয় শিক্ষক এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে গুলি চালানোর পাশাপাশি থোল্লাকান্দি গ্রামে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এমরান হোসেন স্থানীয় শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
পুলিশ সূত্র বলছে, নিহত শিপনের বাবা মনেক ডাকাত ও তার অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িত। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে রিফাত গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্য ও অবৈধ অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নেয়। সেই বিরোধই রক্তাক্ত সংঘর্ষে রূপ নেয় শনিবার রাতে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর ইসলাম বলেন, আমাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রিফাত গোষ্ঠীর লোকজন শিপনকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর প্রতিশোধ নিতে মনেকের অনুসারীরা ভুল করে শিক্ষক এমরান হোসেনের অফিসে হামলা চালায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) পিয়াস বসাক বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে উত্তেজনা রয়ে গেছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: