সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় বিএনপির মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণ, বিজেপির কার্যালয়ে ভাঙচুর


প্রকাশিত:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৫৭

আপডেট:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৫০

ছবি : সংগৃহীত

ভোলায় ছাত্রদল নেতা সিফাত হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অপরদিকে ভোলা জেলা বিজেপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করেছে বিজেপি, এজন্য তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে। এ ঘটনায় ইটের আঘাতে ভোলা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ভোলা জেলা বিজেপি কার্যালয়ের সামনে এসব ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা সিফাত হাওলাদার হত্যার বিচারের দাবিতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতাকর্মীরা জড়িত এবং তারাই সিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। মিছিলটি ভোলা সদরের বাংলাস্কুল মোড় ঘুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মিছিলের পেছনের অংশে কয়েকটি ককটেল সদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটে। এর পরপরই শহরের নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত জেলা বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙে হামলাভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেএতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নতুন বাজার এলাকা উত্তপ্ত ছিল

বিজেপির অফিসে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী হামলা করেননি দাবি করে ভোলা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান অভিযোগ করে বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা সিফাত হাওলাদারকে তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বিজেপির লোকজন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেওই ঘটনার প্রতিবাদে ভোলা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়মিছিলটি ডিসি অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বিজেপির কার্যালয় থেকে মিছিল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ককটেল নিক্ষেপকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তিনি আরও দাবি করেন, বিজেপি নেতাকর্মীরাই নিজেদের কার্যালয় ভেঙে বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

অন্যদিকে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতাসিম বিল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বিজেপি অফিসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নিজেরাই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং পরে তালাবদ্ধ বিজেপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে তাদের কোনো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন না। তিনি দাবি করেন, দলীয় কার্যালয়ে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। বিএনপি নেতাকর্মীরা ন্যাক্কারজনকভাবে অফিসের গেটের তালা ভেঙে ভেতরে থাকা চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল নেতা সিফাত হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ পারিবারিক এবং এতে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। পারিবারিক বিরোধের জেরে তার চাচাতো ভাইয়েরা তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসি আরও বলেন, নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী মিছিল ও মিটিং করা যাবে না এ বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও বিএনপির একাংশ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসে এবং বিজেপি অফিসের দিকে ঢিল নিক্ষেপ করে। মিছিলের দিক থেকে দুই-তিনটি ককটেলের শব্দ পাওয়া যায়। পরে বিজেপি অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা হাজারেরও বেশি ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমার সাথে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top