বিচারক-রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগের প্রতিবাদ
প্রকাশিত:
২০ আগস্ট ২০২৫ ২১:১৪
আপডেট:
২৩ আগস্ট ২০২৫ ২০:৪৯

বিচারক ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার বাদীর করা অশোভন আচরণের অভিযোগের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন (মামুন) ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, মাহমুদুল হাসান নামে এক লোকের বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণ মামলা করেন। এর আগে তিনি এ আসামির বিরুদ্ধে একটা মারধরের মামলা করেন। সেখানে তিনি নিজেকে মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী উল্লেখ করেন। তার ধর্ষণ মামলা পিবিআই তদন্ত করে। তবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে বাদী নারাজি দিলে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল করে। অভিযোগ আমলে নিয়ে মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত ১৪ জুলাই আসামি আত্মসমর্পণ করলে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করি। বিচারক উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামির অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
শরীফ উদ্দিন (মামুন) বলেন, শুনানিকালে বাদীকে কোনো প্রকার অপমানজনক কথা কোনো পক্ষ বলেনি। বিচারক কোনো অপমানজনক কথা বলেননি। আসামি পক্ষ আপসের কথা বললে বিচারক বা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাকে আপসের কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হয়নি। আসামিকে জামিন দেওয়া বা না দেওয়া ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার। বিচারক আসামিকে জামিন দিলে বাদী ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়েছেন যা সত্য না। এরূপ বিবৃতি অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বিচারক এবং বিচার বিভাগ ও পাবলিক প্রসিকিউটর এবং আইনজীবীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য করা হয়। বাদীর অভিযোগ সত্য হলে তিনি ঘটনার দিনই উল্লেখ করতেন। ঘটনার দীর্ঘদিন পর তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন।
মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ওই নারী ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করেন ২০২৩ সালের ২৩ অগস্ট ঢাকা জজ কোর্টে ২৫ লাখ টাকা দেন মোহরে কোর্ট ম্যারেজ করেন। এরপর থেকে শাহবাগ থানাধীন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি (বিজয় নগর) ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে নিয়ে ২৩ অগস্ট, ১০ অক্টোবর, ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি, ১০ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণ করে। তাকে নিয়ে সংসার করার কথা বললে মাহমুদুল হাসান তালবাহানা শুরু করেন। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পরিদর্শক আব্দুল বাকী বেগ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। বাদী ওই প্রতিবেদনে নারাজি দাখিল করেন। পরে আদালত মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সিআইডির পরিদর্শক খালেদা ইয়াসমিন গত ৬ জুন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২৬ জুন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মো. আব্দুল মোক্তাদির আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ১৪ জুলাই মাহমুদুল হাসান আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। সেদিন বাদীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সব পক্ষের বক্তব্য আদালত আসামিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
অশোভন আচরণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে গত ৪ অগস্ট উচ্চ আদালতের রেজিস্টার জেনারেল কার্যালয়ে অভিযোগ করে মামলার বাদী। কোনো আশ্বাস বা সমাধান না পেয়ে বাদী সোমবার বিভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, বিচারক তাকে আসামির সঙ্গে আপস করতে বলেছে। হোটেলে হোটেলে নোংরামি করেছেন, ওপেন কোর্টে এ কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাকে আদালতে কথা বলতে দেননি বলে অভিযোগ করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: