মঙ্গলবার, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪শে ভাদ্র ১৪৩২


ব্যাংক একীভূতকরণ

২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন দেবে সরকার


প্রকাশিত:
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৪

আপডেট:
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২০

ছবি : সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামলে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সমস্যায় পড়া পাঁচটি ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারেরও এই উদ্যোগে সম্মতি রয়েছে। এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠন করা হবে, যার জন্য সরকার প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকার মূলধন দেবে। নতুন এই ব্যাংকের মোট মূলধন হবে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা এটিকে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। এই পাঁচটির মধ্যে চারটিই ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এস আলমের মালিকানাধীন। এছাড়া এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

সরকার এই একীভূতকরণ কার্যক্রম এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে শেষ করতে চায়। এ জন্য একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা সময়ভিত্তিক কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত করবে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এসব আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, একীভূতকরণের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ব্যাংকটির অনুমোদন দেবে, যার সম্ভাব্য নাম হতে পারে 'ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক'। সরকারের মূলধনে এই ব্যাংক গড়ে উঠবে। একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি ব্যাংকের সম্পদ ও দায় এই নতুন ব্যাংকের অধীনে চলে আসবে। ব্যাংকটি মুনাফা করা শুরু করলে সরকার এর শেয়ার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়ে বিনিয়োগ ফেরত নেবে। বড় আমানতকারীদেরও শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে, তবে ছোট আমানতকারীরা টাকা তুলে নিতে চাইলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কর্মকর্তারা মনে করেন, এতে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।

ওয়ার্কিং কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহম্মেদ এবং এতে অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিরা থাকবেন। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি ব্যাংকের শুনানি করেছে। সেখানে বিনা বাক্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক একীভূত হতে সম্মত হয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সময় চেয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশি-বিদেশি নিরীক্ষকদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করে জানিয়ে দিয়েছে যে, একীভূত হওয়া ছাড়া এই ব্যাংকগুলোর জন্য আর কোনো বিকল্প নেই।

গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বও বদল হয়। গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি আগের সরকারের সময়ে ব্যাপক লুটপাটের শিকার হওয়া কয়েকটি ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নেন। এক সভায় তিনি বলেছেন, ব্যাংক একীভূত হবেই, এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই এবং আমানতকারীদের টাকা নিরাপদ থাকবে। তিনি আরও বলেন যে, সরকার আমানতকারীদের দায়িত্ব নেবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top