বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম, একটির দাম ২৫ হাজার টাকা
 প্রকাশিত: 
 ৯ মে ২০২৩ ১৫:৪১
 আপডেট:
 ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২২:১৬
 
                                হাতাকাটা সাদা গেঞ্জি পরে জাপানের হোক্কাইদো দ্বীপের ওতোফুকের একটি গ্রিনহাউজের ভেতর থেকে পাকা আম তুলছেন এক চাষী। প্রথমে মোড়কজাত পরবর্তীতে গন্তব্যে চলে যাওয়ার জন্য একেবারেই প্রস্তুত আমগুলো। ডিসেম্বরের সূর্য ঝলমলে দিনে গ্রিনহাউজটির বাইরের তাপমাত্রা -৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে ভেতরটি প্রায় ৩৬ ডিগ্রি গরম।
নাকাগাওয়া নামের এ কৃষক জাপানের উত্তরভাগের তোকাচি অঞ্চলে ২০১১ সাল থেকে গ্রিনহাউজের ভেতর আম উৎপাদন করছেন। তিনি প্রতিটি আম ২৩০ ডলারে বিক্রি করেন। যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার টাকার সমান। নাকাগাওয়া কখনো ভাবেননি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা তার এ কার্যক্রম একদিন বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম উৎপাদন করবে।
‘প্রথমে কেউ আমাকে এতটা দাম দেয়নি। এই হোক্কাইদোতে, আমি প্রকৃতি থেকে প্রাকৃতিক কোনো কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলাম।’ বলেন ৬২ বছর বয়সী নাকাগাওয়া।
আম উৎপাদন শুরুর আগে নাকাগাওয়া একটি পেট্রোলিয়াম কোম্পানি চালাতেন। কিন্তু পেট্রোলিয়াম খাতের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অন্য কিছু করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন তিনি।
মিয়াজাকির এক কৃষক তাকে পরামর্শ দেন শীতকালে আম উৎপাদন করলে বেশি লাভ। তার সেই পরামর্শ অনুযায়ী নাকাগাওয়া নোরাওয়ার্কস জাপান নামে একটি কোম্পানি খুলে তার কার্যক্রম শুরু করেন। কয়েক বছর পর তার উৎপাদিত আম ‘তুষারের মধ্যে সূর্য’ নামে খ্যাতি লাভ করে।
বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম উৎপাদনের জন্য মাত্র দু’টি প্রাকৃতিক সম্পদ— তুষার এবং উষ্ণ বসন্ত ব্যবহার করেন নাকাগাওয়া। তিনি শীতকালে তুষার জমা করেন এবং গ্রীষ্মকালে নিজের গ্রিনহাউজকে শীতল রাখতে সেগুলো ব্যবহার করেন। গ্রিনহাউজের ভেতরটা শীতল থাকায় আমের মুকুল আসে দেরিতে। অপরদিকে শীতকালে তিনি বসন্তের প্রাকৃতিক উষ্ণতায় গ্রিনহাউজকে উষ্ণ রাখেন। এ পদ্ধতিতে বছরে ৫ হাজার আম উৎপাদন করতে পারেন তিনি।
এমন অদ্ভুত পদ্ধতির কারণে তার আম পাকে শীতকালে। ওই সময় পোকামাকড়ের উৎপাত থাকে না। ফলে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। এছাড়া হোক্কাইদোর পরিবেশ কম আদ্র থাকায় নাকাগাওয়াকে কোনো ক্যামিকেলও ব্যবহার করতে হয় না। এছাড়া শীতকালে ফল তোলায় তাকে শ্রমিকের সংকটেও পড়তে হয় না। ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় জাপানের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে কৃষিসহ প্রায় সব বিষয় বাধাগ্রস্ত হয়।
এসব কিছু নাকাগাওয়ার উৎপাদিত আমকে দিয়েছে বাড়তি স্বাদ। তার দাবি, তার উৎপাদিত আম অন্য সাধারণ আমের তুলনায় অনেক বেশি মিষ্টি এবং তার ফলটি খেতে মাখনের মতো লাগে।
নাকাগাওয়ার এ আমের ক্রেতাও বিশ্বের বড় বড় রেঁস্তোরাগুলো। এ আমের এতোই চাহিদা যে, অনেকে চেয়েও তা পান না।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: