সিনাই উপদ্বীপের কৌশলগত স্থানে চীনের তৈরি এইচকিউ-৯বি দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে মিসর। সম্প্রতি কাতারে রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার পর এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিল প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সরকার।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো আগেই নিশ্চিত করেছিল, সম্প্রতি চীনের উন্নত এইচকিউ-৯বি হাতে পেয়েছে মিসর, যা রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সমতুল্য।
এ বিষয়ে মিসরের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবদেল মাজিদ সাকর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘সামরিক প্রস্তুতি কেবল মনোবলের বিষয় নয়, বরং স্থলভাগে যেকোনো হামলা মোকাবেলা করার জন্য প্রকৃত প্রস্তুতি থাকতে হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘মিসরের সীমান্তকে আঘাত করার যেকোনো প্রচেষ্টা- এমনকি এটি সম্পর্কে শুধু চিন্তাভাবনা করলেও- আমাদের যা আছে (সামরিক ক্ষমতা) এবং যা এখনও প্রকাশ করিনি, তা দিয়ে বিশ্বকে অবাক করে দেবে।’
মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, মূলত গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা থেকে পালিয়ে সিনাই উপত্যকায় আশ্রয় নিয়েছে অনেক ফিলিস্তিনি, যাকে রেডলাইন হিসেবে দেখছে কায়রো। অন্যদিকে দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলার পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এ যুদ্ধে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এইচকিউ৯বি মোতায়েনের মাধ্যমে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকির প্রতিক্রিয়া জানাতে তার ক্ষমতার ইঙ্গিত দিচ্ছে মিসর।
প্রসঙ্গত, চীনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সর্বশেষ ও উন্নত প্রযুক্তি তৈরি এইচকিউ-৯বি ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে শত্রু পক্ষকে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম। এর উন্নত রাডার ভারী ইলেকট্রনিক জ্যামের মধ্যেও ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে যেকোনো বস্তুকে শনাক্ত করতে পারে। এছাড়াও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় এটি মোতায়নের মাধ্যমে বিমানবন্দর, নৌ-বন্দর এবং সামরিক ঘাঁটি সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।
এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গাজার সীমান্তঘেঁষা সিনাই উপদ্বীপে ৪০ হাজার সেনা ও হাজার হাজার ভারী সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে কায়রো এবং ইসরায়েলি সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় সম্প্রতি নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছে দেশটি। যদিও মিসরের এই সামরিক শক্তি আধুনিকীকরণ অভিযানের বিষয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর