ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (ডাকসু ও জাকসু) নির্বাচনের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণের প রেসাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে ছাত্র সংসদের যে নির্বাচন হচ্ছে এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গতকালকে যে জাকসু নির্বাচন হয়েছে সেখানে শুধু ছাত্র দলের কথা কেন বলেন, সেখানে বিভিন্ন প্যানেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইভেন শিক্ষকরা পর্যন্ত নির্বাচন থেকে অনেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। নিশ্চয়ই সেখানে কোনো না কোনো কারণ আছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কাজেই আমার বক্তব্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট দেশের মানুষ ২০০৯ এ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪-তে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮-তে দিনের ভোট রাতে হয়েছে, ২০২৪-এ আমি-ডামি নির্বাচন হয়েছে। মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চায়। সংশ্লিষ্টদের উচিৎ হবে এমন কোনো নির্বাচন আয়োজন না করা যে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আসবে, মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হবে, নির্বাচন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বি দলসমূহ সরে যাবে।
ডাকসু নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম এবং জাকসুতে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষক জান্নাতুলফেরদৌসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন জাহিদ।
‘বিভক্তিতে স্বৈরাচার ফেরার পথ সুগম হবে’ বলে উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, কোনো বিভেদ-বিভাজন আপনাকে আমাকে শক্তিশালী করবে না। মনে রাখতে হবে স্বৈরাচার পালিয়েছে… স্বৈরাচার ফেরত আসার পথ সুগম হবে না। কিন্তু কেউ যদি স্বৈরাচারকে পুনর্বাসিত করতে চান তাহলে এই ধরনের প্রহসনমূলক ব্যবস্থার আয়োজন করবেন যেটি সত্যিকার অর্থে শেষ বিচারে ভালো বলে পরিগণিত হবে না।
তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, সবার প্রতি আহ্বান ঐক্যবদ্ধ হন। গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করেছেন তারা কোনো অবস্থাতেই বিভাজনের রাজনীতিতে যাবেন না। ঐক্যের রাজনীতিতে আসুন। জনগণের মনের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। জনগণের উপর দায়িত্ব দিন।
ডা. জাহিদ বলেন, যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের বলব, বামেও যাবেন না ডানেও যাবে না…মধ্যবর্তী অবস্থা অবলম্বন করুন এবং ভোটারদের সঙ্গে জনগণ ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলুন। কোনদিকে হেলে পড়ার দরকার নেই। আপনি আপনার নিরপেক্ষতা দিয়েই প্রমাণ করবেন এবং আগামী দিনের ভবিষ্যৎ স্বীকৃতি দেবে আপনার অবস্থান কি ছিল। কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে, সেই নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা শিক্ষকরা সরে দাঁড়াবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনের সংবিধান কী হবে, সংস্কার কী ধরনের হওয়া উচিৎ। জনগণ যাদেরকেই নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবে তারাই ৩৬ জুলাইয়ের যে আদর্শ এবং উদ্দেশ্য সর্বোপরি এ দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করেই আগামী দিনে সংসদে সংস্কার হবে। সেই সংস্কারের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ভবিষ্যৎমুখী বাংলাদেশ অর্থাৎ আগামীর বাংলাদেশ ৩১ দফার আলোকে বিনির্মাণে বিএনপির দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দেবেন।