ভোলার সদর উপজেলায় মারিয়া মনির মিম (১৬) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ওই কিশোরীর মরদেহ শ্বশুরবাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তার নানা বাড়িতে পাঠানো হয়, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি এটি হত্যাকাণ্ড।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের শাহামাদার গ্রামের মীর বেলায়েত মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মিম ওই বাড়ির বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. মনির ও শিক্ষিকা বিবি তানিয়া দম্পতির বড় মেয়ে এবং সে কাচিয়া শাহামাদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। তার স্বামী মো. রাকিব ওই একই গ্রামের প্রতিবেশী মো. জসিমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক থেকে গত রমজান মাসে সন্ধ্যায় মারিয়া ও রাকিব দুজন পরিবারের অগোচরে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে যায় এবং সেখানেই দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দুই-তিন মাস আগে তারা ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে আসে এবং মারিয়া তার স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করছিল। বুধবার দুপুরে হঠাৎ একটি অ্যাম্বুলেন্স মারিয়ার নানা বাড়ির উঠানে এসে থামে। বাড়ির লোকজন দেখতে পান অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে মারিয়ার মরদেহ। ঘটনাটি জানাজানি হলে দূর-দূরান্তের মানুষ ছুটে আসেন ওই বাড়িতে।
এ ঘটনায় মারিয়ার বাবা মনির ও মা তানিয়া অভিযোগ করে বলেন, গত রমজান মাসে সন্ধ্যায় প্রতিবেশী রাকিব আমাদের মেয়ে মারিয়াকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়। পরে আমরা স্থানীয় থানা পুলিশকে জানালে তারা আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে আর আমাদের মেয়েকে খুঁজে পাইনি। রাকিব ও তার পরিবার মারিয়াকে লুকিয়ে রেখেছিল। তারা আমাদের মেয়েকে মেরে আজ অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ বাড়িতে পাঠিয়েছে, আমরা এর বিচার চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাকিবের মামা মো. ফিরোজ বলেন, গতরাতে মারিয়া টয়লেটে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে উদ্ধারের পর স্থানীয় পরানগঞ্জ বাজারে পল্লী চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মধ্যরাতে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স যোগে বরিশালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার পরিবারের ভয়ে মারিয়ার মরদেহ সরাসরি অ্যাম্বুলেন্স তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এটা উচিত হয়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক রিয়াজুল হাসান বলেন, ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহের সুরতহাল সম্পূর্ণ হয়েছে। মরদেহটি ভোলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।