বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত করার জন্য পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার পর্যায়ে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ে জোর দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট ) সিউলে চতুর্থ দফা ফরেন অফিস কনসালটেশনে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ে জোর দেয়।
কনসালটেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক-পূর্ব ও পশ্চিম) রাষ্ট্রদূত ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং কোরিয়ান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রথম ভাইস মিনিস্টার পার্ক ইউনজু।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিসর নিয়ে গঠনমূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী আলোচনা হয়। আলোচনার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান অনুমতি ব্যবস্থার (ইপিএস) অধীনে মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, কোরিয়ান ইলেকট্রনিক্স এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকেন্দ্রের স্থানান্তর, জ্বালানি সহযোগিতা, নিরাপত্তা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) পরিস্থিতি। উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলি নিয়েও মতবিনিময় করে।
উভয়পক্ষ ২০২২ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফার এফওসি বৈঠকের পর থেকে অগ্রগতি পর্যালোচনা ও সহযোগিতার নতুন পথ চিহ্নিত করে। বিশেষ করে- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জ্বালানি রূপান্তর, মৎস্য, জৈবপ্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সামুদ্রিক বন্দর ও শিপইয়ার্ডের আধুনিকীকরণে।
উভয়পক্ষ রাজনৈতিক আস্থা আরও গভীর করতে এবং উন্নয়ন কৌশলগুলিকে সামঞ্জস্য করতে সম্মত হয়েছে। কোরিয়ান পক্ষ ইডিসিএফ, কইকা, ইডিপিএফ অনুদান এবং ঋণের আওতায় বাংলাদেশের উচ্চমানের অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে সমর্থন, কোরিয়ান উৎপাদন কেন্দ্র ও এর সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে তাদের শিল্প মূল্য শৃঙ্খল সম্প্রসারণে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। কোরিয়া দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখার আগ্রহের উপরও জোর দিয়েছে।
বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়ন, ইপিএস প্রোগ্রামের অধীনে নিয়মিত অভিবাসন এবং বৈজ্ঞানিক শিক্ষা জোরদার করার জন্য শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা চায়। কোরিয়ান পক্ষ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে এবং টেকসই মানবিক সহায়তার পাশাপাশি মিয়ানমারে তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেয়।
উভয়পক্ষ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করেছেন এবং অভিন্ন উদ্বেগের বহুপাক্ষিক বিষয়গুলিতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ, কৌশলগত সুবিধা এবং পরিপূরকতা সর্বাধিক করার জন্য একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা শেষ হয়েছে।