40590

11/14/2025 একই দিনে গণভোট-নির্বাচন সংস্কারকে গুরুত্বহীন করবে : ডা. তাহের

একই দিনে গণভোট-নির্বাচন সংস্কারকে গুরুত্বহীন করবে : ডা. তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:০১

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ভাষণ দেশে ‘হতাশা’ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্দোলনরত আট দলের নেতারা। তাদের অভিযোগ, সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মানেনি, বরং একটি দলের স্বার্থে সিদ্ধান্তে কাটছাঁট করেছে। সবচেয়ে সমালোচিত হয়েছে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের ঘোষণা। এই সিদ্ধান্ত সংস্কারকেই ‘গুরুত্বহীন’ করে দেবে। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিতে অন্তত তিনজন উপদেষ্টার অপসরণ দাবি করেছেন আটদলের নেতারা।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে মগবাজারের আলফালাহ মিলনায়তনে আন্দোলনরত আট দলের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন নেতারা।

এসময় বাংলাদেশ জামাত ইসলামীর নায়েবে আমির ডা সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জাতি ভেবেছিল সরকার সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতায় দেখা গেছে, কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ গেছে এবং ‘একটি দলের আপত্তি মেনে সরকার বড় ধরনের কম্প্রোমাইজ করেছে।’ তার মতে, সরকার নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসে একটি দলের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে জনগণের প্রত্যাশা ভঙ্গ হয়েছে

সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছিল সংস্কারের সব উপাদান একসঙ্গে গণভোটে যাবে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা তা চার ভাগে ভাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ডা. তাহের বলেন, এতে সাধারণ ভোটারের জন্য বিষয়গুলো জটিল হবে, সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে। এই অবস্থায় আট দলের দাবি হলো এ বিভাজন বিএনপির ‘নোট অব ডিসেন্ট’ মানানোর কৌশল; এটি কমিশনের নীতির বাইরে এবং রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট।

ডা. তাহের বলেন, এনসিসি সুপারিশ করেছিল, পরবর্তী সরকার ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংস্কার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য থাকবে। না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত হবে। সরকার এই বাধ্যবাধকতা ভাষণে উল্লেখ করেনি। ড. তাহেরের অভিযোগ এটিও বিএনপিকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা।

তবে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অন্তত সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমেই সংস্কার বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে যা আট দলের দীর্ঘদিনের দাবি।

গণভোট ও নির্বাচন একই দিনে: ‘সংস্কারকে চাপা দেওয়ার ফাঁদ’

সবচেয়ে বেশি সমালোচনা এসেছে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজন নিয়ে।

ডা. তাহের বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ চেয়েছে গণভোট আগে ও আলাদা দিনে হোক। তা না করে একই দিনে ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার সংস্কারের গুরুত্ব কমিয়ে ফেলেছে।

তার মতে, ‘একদিনে হলে দলগুলো নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকবে, ফলে গণভোটে ভোট কম পড়বে। পরে এক শ্রেণির লোক বলবে জনগণ নাকি সংস্কার চায় না। এটিই আসল ফাঁদ।’

আট দল দাবি তুলেছে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে পরিবর্তন করে গণভোটের আলাদা তারিখ ঘোষণা করতে হবে।

নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ’, তিন উপদেষ্টার অপসরণ দাবি

ড. তাহের অভিযোগ করেন, সরকার এখন নিরপেক্ষ অবস্থানে নেই। প্রশাসনে নির্দিষ্ট দলের অনুগত ব্যক্তিদের বসানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কমপক্ষে তিনজন উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন। তাঁদের অপসারণ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

সংস্কারনির্বাচন একসঙ্গে প্রসঙ্গে ডা. তাহের বলেন, ‘বিষয়টা অনেকটা এমন আপনার প্রয়োজন ছিল একটি বই কেনা, কিন্তু দোকানদার বইয়ের সঙ্গে পুরো বাজারের তালিকা ধরিয়ে দিল। সবাই তালিকা পূরণ করতেই ব্যস্ত হয়ে গেল, বইটার গুরুত্ব কোথায় হারিয়ে গেল।’

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]