রূপপুর প্রকল্পকে অসহায় অবস্থায় কখনোই পড়তে দেবে না রাশিয়া
 প্রকাশিত: 
 ২৩ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৫৩
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৮
                                বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাইলফলক অর্জনের পথে। রূপপুর প্রকল্পকে কখনোই ‘অসহায় অবস্থায়’ পড়তে দেবে না রাশিয়া। ব্যয়বহুল এ প্রকল্পের জন্য আগামী বছরই বাংলাদেশে আসতে যাচ্ছে পারমাণবিক জ্বালানি বা ইউরেনিয়াম।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা-রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ বাংলাদেশ সফরে এ বিষয়গুলোরই নিশ্চয়তা দিয়ে গেলেন।
প্রকল্প এলাকায় এক সাক্ষাৎকারে রুশ ফেডারেশনের এ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি চালুর ৩ থেকে ৪ বছর পরই এটি পরিচালনায় সক্ষমতা অর্জন করবেন বাংলাদেশের কর্মীরা।
এ এক মহাকর্মযজ্ঞ, যা ক্রমেই বদলে দিচ্ছে চিরচেনা পদ্মার পাড়। পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঈশ্বরদীর মাটি এখন দিনরাত জাগ্রত নির্মাণের গন্তব্যে পৌঁছাতে।
এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মাণাধীন দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্পে ৯০ শতাংশই রাশিয়ার ঋণ। চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জাঁতাকলে অর্থায়ন নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা শুরু হয় রূপপুর প্রকল্পের অনিশ্চয়তা নিয়ে। বিড়ম্বনার বন্ধুর পথ পেরিয়ে প্রকল্পটির প্রথম ইউনিটের নির্মাণকাজ ৭০ শতাংশ শেষ, প্রস্তুতি এখন চালুর দিকে।
শুধু ভৌত অগ্রগতিই নয়, বিশালাকৃতির এ প্ল্যান্ট চালাতে যে দক্ষ জনবল প্রয়োজন, তারও জোগান দিচ্ছে রোসাটম। পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মীদের নিবিড় প্রশিক্ষণের জন্য রূপপুরে চালু করা হয়েছে সায়েন্টিফিক ট্রেনিং সেন্টার। এখানে ফিজিক্যাল স্টার্টআপ, পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ ও কমিশনিংয়ের বিষয়ে সর্বাধুনিক সিমুলেটরের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হচ্ছে প্রকৌশলীদের।
যারা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় যুক্ত থাকবেন তাদের রাশিয়ার নভোভারোনেজ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে একদফা এবং দ্বিতীয় দফা প্রশিক্ষণ দেয়া হয় রূপপুরের ট্রেনিং সেন্টারে।
১৯ অক্টোবর রূপপুরের দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ইনস্টলেশন উপলক্ষে পাবনায় এসেছিলেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ।
রুশ ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ এ কর্মকর্তা একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রকল্পটির বিভিন্ন দিক নিয়ে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সহস্রাধিক পরমাণু বিশেষজ্ঞ তৈরিতেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব রাশিয়ার। প্রথম ইউনিট চালানোর জন্য ২৪০ জনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রায় শেষ।
অ্যালেক্সি লিখাচেভ বলেন, ‘রোসাটম বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যারা ভবিষ্যতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করবেন। তারা ধাপে ধাপে প্রশিক্ষিত হচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে রাশিয়ায় ৩০০ বাংলাদেশিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।’
রোসাটম মহাপরিচালক বলেন, ‘৬২৪ জনের মতো বিশেষজ্ঞ কাজ শুরু করেছেন। আমরা আরও ১৭ বিশেষজ্ঞকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যারা ভবিষ্যতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করবেন।’
রুশ সহায়তায় নির্মাণ করা হলেও এর পরিচালনাভার কবে বুঝে পাবে বাংলাদেশ— এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যালেক্সি জানান, ৩-৪ বছর পর্যন্ত প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান প্রয়োজন। এমনকি স্পর্শকাতর প্রযুক্তির এ প্ল্যান্টকে কখনোই অসহায় হতে দেবে না রোসাটম তথা রাশিয়া।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: