ইসরাইলে ২০ লাখ রুশভাষী, ইরান ইস্যুতে যা বলেলেন পুতিন
 প্রকাশিত: 
 ২৩ জুন ২০২৫ ১২:১০
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২১
 
                                চলমান ইরান-ইসরাইল সংঘাতে রাশিয়াকে ব্যাপক আলোচনা হলেও সরাসরি কোনো শক্তির পক্ষ নেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমার পুতিন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের মূল অধিবেশনে এ ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থান তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
পুতিনের ভাষায়, রাশিয়ার সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ও ঐতিহাসিক। অন্যদিকে ইসরাইলের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ রুশভাষী। তাই সরাসরি কোনো পক্ষকে সমর্থন না করে কূটনৈতিক সমাধান চায় রাশিয়া।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে পুতিন বলেন, ‘ইসরাইলে প্রায় ২০ লাখ রুশভাষী রয়েছেন। এ কারণে ইসরাইলকে একটি রুশভাষী দেশ বললেও ভুল হবে না। আমাদের ইতিহাস ও বর্তমান পররাষ্ট্রনীতিতে বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পায়। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রায় ১৫ শতাংশ নাগরিকই মুসলমান। এর বাইরেও আরব ও মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ, আস্থানির্ভর এবং অনেক ক্ষেত্রেই মিত্রসুলভ। আমরা ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পর্যবেক্ষক সদস্যও।’
ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির পক্ষে রাশিয়ার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, ‘আমরা কেবল কথায় নয়, বাস্তব পদক্ষেপেও ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিকে সমর্থন করি। বুশেহারে আমরা একটি পরমাণু রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করেছি। নানা চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি সত্ত্বেও এর কাজ আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
মস্কো ইরানকে আরও বেশি সমর্থন দিতে পারত—এ বিষয়ে পুতিন প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে কি ইরানের হয়ে আমরা যুদ্ধ করলে ঠিক মাত্রার সমর্থন দেওয়া হতো?’ এ সময় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন রুশ নেতা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই রাশিয়ার স্বার্থ ও আদর্শ রক্ষায় লড়াই করছি। আমাদের প্রতিপক্ষ ও ইরানের প্রতিপক্ষ—দুপক্ষই মূলত একই ধাঁচের শক্তি।’
‘একই ধাঁচের শক্তি’ বলতে পুতিন হয়তো ইউক্রেন ও ইসরাইল দুপক্ষই পশ্চিমা মদদপুষ্ট—এ বিষয়টিই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, সংঘাত শুরুর পর থেকেই তিনি ইসরাইল, ইরান ও মার্কিন নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছেন এবং তাদের কাছে সমঝোতার কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। এসব প্রস্তাবে দুই পক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার এবং ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা—উভয় বিষয়েই ভারসাম্য রাখার কথা বলা হয়েছে।
তবে রাশিয়া মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নামতে চায় না বলেও স্পষ্ট করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল কিছু ধারণা দিচ্ছি। যদি তেহরান ও পশ্চিম জেরুজালেম এগুলোতে সাড়া দেয়, আমরা তাতে খুশি হবো।’
পুতিন বলেন, ‘প্রত্যেকটি সংঘাতের পেছনে একটি নির্দিষ্ট বাস্তবতা থাকে। তাই সব ক্ষেত্রেই এক রকম সমীকরণ প্রয়োগ করা যায় না।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়া এই সংকটে পক্ষ নেওয়ার বদলে যোগাযোগ ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান খুঁজছে।’সূত্র: এএফপি

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: