রাজবাড়ীতে শিশুদের দিয়ে চলছে জাটকা শিকার
 প্রকাশিত: 
 ১০ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৪৫
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩৯
 
                                রাজবাড়ী জেলার পদ্মা নদীতে শিশুদের হাতে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা শিকারের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। শিশুদের দিয়ে অবৈধভাবে জাটকা শিকার করানো হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় শিশু ও বয়স্ক জেলেরা প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল ব্যবহার করে নিষিদ্ধ জাটকা শিকার করছে, যা দেশের মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মাছ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এদিকে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন বাজারে এই অবৈধ কারেন্ট জালও সহজেই পাওয়া যাচ্ছে, যা কার্যত পুরো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। সরকার নিষিদ্ধ করেছে যে, জাটকা ইলিশ মাছ ধরা, বহন করা এবং বিক্রি করা যাবে না, তবে তা মানা হচ্ছে না। এই অবৈধ কার্যকলাপের ফলে ইলিশ মাছের বিলুপ্তি এবং সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠছে।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, রাজবাড়ী জেলায় ১৪ হাজার ২০০ নিবন্ধনকৃত জেলে রয়েছে। তবে শিশুদের নিবন্ধনকৃত জেলে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্ত বাস্তবে দেখা যায়, কিছু জেলে সরকারের নিয়ম-কানুন মেনে চললেও অধিকাংশই মৎস্য আইন অমান্য করছে। শিশুদেরও এই কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়া বিশেষ উদ্বেগের বিষয়। জেলার নিবন্ধনকৃত জেলেদের পাশাপাশি শত শত শিশু জেলে প্রতিনিয়ত অবৈধ কারেন্ট জাল এবং চায়না দুয়ারী দিয়ে ইলিশ মাছ শিকার করছে।
একাধিক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করছি। বাজার থেকে প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল ক্রয় করছি। কখনও কেউ বাঁধা দেয়নি। কিন্ত অভিযানের সময় মৎস্য কর্মকর্তা, নৌ পুলিশ নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। তখন কারেন্ট জাল ধরলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
গোয়ালন্দ মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. অছেল বেপারী বলেন, আমরা নিবন্ধনকৃত জেলেরা সব সময় সরকারি নিয়মনীতি মেনে চলি। কিন্ত দেখা যায়, মৌসুমী জেলেরা এই সুযোগ নিয়ে নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ মাছ শিকার করছে। যার দায় আমাদের ওপর পড়ে। কারেন্ট জাল প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। সেদিকে অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। তাহলে নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে কেউ মাছ শিকার করতে পারবে না।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, রাজবাড়ী জেলায় ১৪ হাজার ২০০ জন নিবন্ধনকৃত জেলে রয়েছে। কিশোর জেলে রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার পূর্বে নিবন্ধনকৃত জেলে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জেলেদের সচেতন করতে আমরা জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করছি। প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে যাতে তারা বুঝতে পারে, এই কার্যকলাপ শুধু তাদের নয়, পুরো জাতির জন্য ক্ষতিকর। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা এবং এর সমাধানে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: